মাশরুম চাষে সফল প্রবাসফেরত দেলোয়ার
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৩-০২-২০২৫ ০৫:৩৩:১৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৩-০২-২০২৫ ০৫:৩৩:১৮ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ করে সফল হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের মো. দেলোয়ার হোসেন নামে এক যুবক। প্রবাস থেকে ফিরে বাড়ির আঙিনায় মাশরুমের খামার গড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জের বিনোদ ধর্মপুর গ্রামের সফল এ উদ্যোক্তার দেখাদেখি মাশরুম চাষে এখন আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেকে। স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভজনক এ পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে নিজের উন্নয়নের পাশাপাশি ও এলাকার বেকারদের কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছেন এ উদ্যোক্তা।
সরেজমিন লক্ষ্মীপুরের স্থানীয় কৃষক দেলোয়ারের মাশরুমের খামারে গিয়ে দেখা যায়, খড়কুটো, কাঠ ও গমের ভুসি, ক্যালসিয়াম চুন ও পানির মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে স্পন (মাশরুম তৈরির প্রধম ধাপ)। বাড়ির পাশে গড়ে তোলা এ খামারটিতে নিজে ও তার স্ত্রী-স্বজনসহ শ্রমিকদের প্রতিদিনের কর্ম ব্যস্ততা এমনি।
পলিথিনে মোড়ানো প্যাকেটে গর্ত করে প্লাস্টিকের সাদা মুখ লাগিয়ে এসব ভর্তি করা হয় প্রথমে। পরে জীবাণুনাশক মেশিনে ২৪ ঘণ্টা রাখা হয়। এরপর ল্যাবে নিয়ে টেস্টটিউবে মাদার টিস্যু দিয়ে ২৮ দিন রাখা হয় ল্যাব ঘরে (এসি রুমে)। পরে মূল খামারে সারিবদ্ধভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয় প্যাকেটগুলো। এতে পলিথিনগুলো ভেদ করে বেরিয়ে আসে ছোট-বড় মাশরুম।
প্রতিদিন ২০-২৫ কেজি হারে তা তুলে বাজারজাত করেন এ খামারি। প্রতি কেজি মাশরুম বিক্রি করা হয় ২০০-২৫০ টাকা হারে। সুস্বাদু মজাদার খাবার হিসেবে আশপাশের মানুষ কিনে নিয়ে যান মাশরুম। নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও ঢাকায়ও বিক্রি হয় এখানকার উৎপাদিত এ পণ্য। কেউ মাংসের সঙ্গে, আবার কেউবা চপ ও সবজি হিসেবে খেতে পছন্দ করেন বলে জানান।
জানা যায়, বিদেশে সুস্বাদু মাশরুম খেয়ে দেশে ফিরে খামার গড়ার স্বপ্ন জাগে প্রবাস ফেরৎ লক্ষ্মীপুরের যুবক দেলোয়ারের মনে। অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ২০২২ সালে সেই স্বপ্ন পূরণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে মাশরুমের খামার গড়ে তোলেন তিনি। ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ শুরু করেন। বর্তমানে ৩ জাতের মাশরুম রয়েছে তার খামারে।
উদ্যোক্তা দেলোয়ার জানান, এসব মাশরুমকে ঘিরে শুরুতে অনেকের অনীহা ছিল। বর্তমানে সবাই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সচেতনতা সৃষ্টি আর সঠিক বাজারজাত করতে পারলে মাশরুম উৎপাদনে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ১০০ টাকা খরচে ৪০ টাকা আয় হয় বলে জানান তিনি। লাভজনক হওয়ায় আশপাশের যুবকরা মাশরুম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠৈছেন। বর্তমানে তার খামারে ২০-২৫ কেজি মাশরুম উৎপাদন হয়। আগামীতে ৫০০ কেজি কিংবা চাহিদার আলোকে আরও বাড়তি মাশরুম উৎপাদন করার ব্যাপারে আশাবাদী এ উদ্যোক্তা। এ ছাড়া মাশরুমকে ঘিরে বিদেশে রপ্তানি করে নিজের উন্নয়নের পাশাপাশি এবং গ্রামের বোকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সরকারি সহায়তার দাবি জানান তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, দেলোয়ারের মাশরুমের খামার এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তার দেখাদেখি মাশরুম চাষে আগ্রহী উঠেছেন অনেকে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান ইমাম জানান, জেলায় নতুন এ খাদ্যপণ্যকে ঘিরে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগ্রহীদের পাশে আছে কৃষি বিভাগ। প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন এ কর্মকর্তা।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স